- পুরাণ মতে শ্রাবণ মাসেই সমুদ্র মন্থন ঘটেছিল। সেই সময় মহাদেব, হলাহল বিষ পান করেছিলেন। সৃষ্টি কে বাঁচাবেন বলে মহাদেব নিজে বিষ পান করেন ।সকল দেবতা ও আসুর সকলে অমৃত পান করার জন্য উৎফুল্ল ছিল কিন্তু বিষ পান মহাদেব ই করেন। সেই সময় বিষের তেজে তাঁর শরীর নীল হয়ে যায় তাই শিবের আরেক নাম ‘নীলকণ্ঠ’। এই ভাবেই সৃষ্টির রক্ষা করেছিলেন মহাদেব, তাই তাঁকে ‘সৃষ্টির রক্ষাকর্তা’ বলা হয়। শ্রাবণ মাসে এই জন্য বিশেষভাবে পুজো করা হয়|
- পুরাণ মতে সমুদ্র মন্থনে ওঠা হলাহল এই শ্রাবণ মাসেরই পান করেছিলেন শিব । সেই প্রচণ্ড বিষ পান করে তাঁর সারা শরীর নীলবর্ণ ধারণ করেন মাতা পার্বতী মহাদেব কে বাঁচান এই বিষ থেকে। তাই মহাদেবের আর এক নাম নীলকণ্ঠ। সেই কারণে মহাদেবকে শ্রাবণ মাসে দুধ অথবা জল ঢেলে পুজো করেন ভক্তরা। বিশেষ করে শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলিতে উপবাস রেখে শিবলিঙ্গের মাথায় দুধ অথবা জল ঢালার প্রথা রয়েছে। এতে পূণ্য লাভ হয় বলে বিশ্বাস। এ ছাড়াও শ্রাবণ মাসে বেশি করে ভজন, কীর্তন শুনলে তা আধ্যাত্মিক ভাবে মানুষের আত্মাকে শোধন করে বলে মনে করা হয়। শ্রাবণ মাসকে উত্সবের মাস হিসেবেও মনে করা হয়।
- শিব-পার্বতীর গভীর প্রেমকে মাথায় রেখে শ্রাবণ মাসকে ভালোবাসার মাস হিসেবেও মনে করা হয় হিন্দু ধর্মে। শুধু নর-নারীর মধ্যে নয়, বেশিরভাগ পশুপাখির এটাই মিলনের সময়। সে কারণে শ্রাবণ মাসে ন্যাশনাল পার্কগুলি বন্ধ রাখা হয়। যাতে দর্শকরা পশু-পাখিদের এই সময় বিরক্ত না করতে পারে।
- এ ছাড়াও বৈজ্ঞানিক মতে শ্রাবণ মাসে আমাদের পেটের অনেক সমস্যা দেখা দেয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। এই সময়ে না না শরীর খারাপ হয়,তাই বেশি তৈলাক্ত, মশলাদার খাবার এই সময় বর্জন করা উচিত। শ্রাবণ মাসে নিরামিষ খাওয়া সম্ভব হলে সবচেয়ে ভালো।আর এই সময়ে রোগ সংক্রমণ দ্রুত গতিতে বেড়ে যায়।তাই নিরামিষ খাবার খাওয়া ভালো।
শ্রাবণে শিব পুজোর পিছনে সমাজবিজ্ঞানের কিছু ব্যখ্যা রয়েছে ৷ শিব মানেই সৃষ্টি ৷ শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি হয়, উর্বর হয়ে ওঠে জমি ৷ বপন, কর্ষণের জন্য আদর্শ সময় ৷ একদিকে যেমন জমিতে নতুন ফসল ফলানোর সময় এই শ্রাবণ মাস অন্যদিকে পশুপাখিদের মিলনের সময় এই মাস ৷ সেই কারণে অধিকাংশ ন্যাশনাল পার্কগুলো এই সময় বন্ধ থাকে ৷ শিব সৃষ্টির প্রতীক ৷ তাই এই মাসে তিনি পূজিত হন ৷
আমদের লেখা কেমন লাগলো অবশ্যই comment box এ জানাবেন। ধন্যবাদ