মল মাস অর্থ
পৌরহিত্যের ভাষায় মল মাস হল ‘মলিন মাস’। হিন্দি বলয়ে বলা হয় ‘অধিক মাস’। অর্থাৎ, অতিরিক্ত মাস। এই অধি মাসে যেহেতু কোন পালনীয় তিথি বিদ্যমান থাকে না, তাই এই মাসে কোন বৈদিক কর্মকাণ্ড হয় না। সেই জন্যই একে মলিন মাস বা মল মাস বলা হয়।
একই মাসে দু’টি অমবাস্যা তিথি পরলেও সেটিকে মলমাস বলা হয়। ‘মল’ শব্দের অর্থ অশুভ। তাই এই মাসকে বর্জিত হিসেবে হিন্দু ধর্মের কোনও পূজা বা শুভ অনুষ্ঠান যেমন বিবাহ, অন্নপ্রাশন ইত্যাদি হয় না। তবে শ্রাদ্ধ বা সপিণ্ডকরণ করা যায়।
বৈদিক কর্মকাণ্ডের জন্য এটি শুভ না হলেও পরমার্থিক কর্মকাণ্ডের জন্য এটি শুভ। এই মাসটি সমস্ত প্রকার কর্মশূন্য। তাই এই মাসটি কৃষ্ণ নাম করার জন্য উপযোগী। এই মাসে ভগবানের নাম করলে তা অধিক ফলপ্রদ হয়। তাই মলমাস কে পুরুষোত্তম মাস ও বলা হয়। তাই মলমাস একদিক থেকে অশুভ হলেও অন্যদিকে শুভ।
মল মাস বলতে কি বোঝায়?
এখন যে চান্দ্র মাসে সূর্য একটি রাশি থেকে অন্য রাশিতে গমন করে না, পুরো মাস জুড়ে একটি নির্দিষ্ট রাশিতে অবস্থান করে সেই মাসের নাম পরবর্তী মাসের নাম অনুসারেই হয়। আর এর সাথে পরের মাসে অধিক শব্দটি ও বসে যায়। এই অধিক মাস টিকেই বলা হয় মল মাস
বাংলায় দুই থেকে তিন বছর অন্তর অন্তর একটি মল মাস হয়। কারণ সূর্যের একমাস তিরিশ দিনে হলেও চাঁদের একমাস সাতাশ থেকে সাড়ে উনত্রিশ দিনে হয়। কয়েকদিনের এই ফারাক এক বছরে গিয়ে দাঁড়ায় এগারো দিন। আর এই ফারাকের জন্যই কোনও কোনও বছরে মলমাস পিছিয়ে যায়।
আমরা সবাই জানি মল মাসে কোন শুভ কার্য হয়না। মলমাস বলতে কী বোঝায়, মলমাস আসলে কী, কেন এই মাসে কোন শুভ কার্য হয়না আজকের প্রতিবেদনে আলোচনা করা হলো
সূর্য ও চন্দ্রের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে হিন্দুদের বর্ষপঞ্জি তৈরি হয়। চন্দ্রপথ কে ২৮ ভাগে ভাগ করে এক একটি ভাগের নামে একটি নক্ষত্র কে রাখা হয়েছে। এই ভাগ গুলি হল :-
অশ্বিনী , ভরণী , কৃত্তিকা , রোহিণী , মৃগশিরা , আর্দ্রা , পুনর্বসু , পুষ্যা , অশ্লেষা , মঘা , পূর্ব ফল্গুনী , উত্তর ফল্গুনী , হস্তা , চিত্রা ,স্বাতি , বিশাখা , অনুরাধা , জ্যেষ্ঠা , মূলা ,পূর্বাষাঢ়া , উত্তরাষাঢ়া , অভিজয়িনী , শ্রবণা , ধনিষ্ঠা , শতভিষা , পূর্বভাদ্রপদ , উত্তর ভাদ্রপদ , রেবতী ।
চলমান নক্ষত্রের নাম থেকেই বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ আষাঢ় শ্রাবণ ইত্যাদি মাসের নাম হয়েছে। যে মাসের পূর্ণিমায় চিত্রা নক্ষত্রা আছে সেই মাসের নাম চৈত্র আবার যে মাসের পূর্ণিমায় অশ্বিনী নক্ষত্র আছে সেই মাসের নাম আশ্বিন।
আমাদের লেখা কেমন লাগলো অবশ্যই comments box এ জানাবেন। ধন্যবাদ