ব্রাহ্মণ কাদের বলে?
ব্রাহ্মণের পৈতায় ৯ টা সুতো থাকে।
৯ টা সুতোর ৯টা গুণ। যাকে বলে নব গুণে ব্রাহ্মণ। সেই গুণ গুলো কী?
১) সম:- সম মানে সমান। ব্রাহ্মণ সবাইকে সমান চোখে দেখবে। কে উচ্চ, কে নীচ, কে সুচী, কে মুচী। ব্রাক্ষণের এসব ভেদাভেদ রাখা যাবে না।
২) দম:- দম মানে দমিয়ে রাখা বা দমন করা। নিজের দেহের সমস্ত ইন্দ্রিয়কে সর্বদা দমন করে রাখতে হবে।
৩) তপ:- তপ মানে তপস্যা করা। ব্রাহ্মণ কে মাঝে মধ্যে তপস্যা করতে হবে।
৪) শৌচ:- শৌচ মানে পবিত্রতা। মন ও দেহকে সর্বদা পবিত্র রাখতে হবে।
৫) ক্ষান্তী:- ক্ষান্তী মানে ক্ষমা করা। ক্ষমা পরম ধর্ম। যে যা অপরাধ করুক ব্রাহ্মণ অপরাধ হিসাবে না দেখে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবে।
৬) আর্যনং:- আর্যনং মানে সরল ভাব। সর্বদা নিজের ভিতরে শিশুর মতন সরলতা রাখতে হবে।
৭) জ্ঞানও:- জ্ঞানও মানে জ্ঞানের উপরে আরো জ্ঞান। যাকে বলে চৈতন্য জ্ঞান। ভিতরে মৌনভাব রেখে চৈতন্য জ্ঞান থাকতে হবে।
৮) বিজ্ঞানও:- বিজ্ঞানও মানে সর্বশ্রেষ্ট জ্ঞান। যা গীতা, ভাগবতের জ্ঞান। ব্রাহ্মণের ভিতরে গীতা ভাগবতের জ্ঞান সম্পূর্ণরূপে থাকতে হবে। সেই জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে।
৯) আস্তিক্য:- আস্তিক্য মানে যারা ধর্ম মানে বা ধর্মের প্রতি অটুট বিশ্বাস। যাদের ভিতরে বেশি পুণ্য সুকৃতি থাকে তাদের বলে আস্তিক্য। ব্রাহ্মণের ভিতরে এটা অবশ্যই অবশ্যই থাকতে হবে।
যারা ধর্ম মানে না বা ধর্মের প্রতি কোন বিশ্বাস নেই তাদের বলে নাস্তিক। এই নয়টি গুণ যার মধ্যে আছে তিনিই ব্রাহ্মণ। এই গুণ ও জ্ঞান ব্রাহ্মণের না থাকলে তিনি ব্রাহ্মণ নন।
ব্রাহ্মণকে ভাবতে হবে, নিজেকে পর্যালোচনা করতে হবে। চতুর্বর্ণের ভিতরে ব্রাহ্মণ কুলশ্রেষ্ট। কেন আমি ব্রাহ্মণ কুলে এলাম। এসে আমার করণীয় কী? শুধু ব্রাহ্মণ নয়, আমদের সকলেরই ভাবা উচিৎ। কোথায় ছিলাম? কেন দুঃখময় জগতে এলাম? কোথায় যাব? ব্রাহ্মণের জ্ঞান, অভিমান শূন্যতা, দম্ভহীনতা, অহিংসা, ক্ষমা, সহনশীলতা, সরলতা, গুরুসেবা, পিতামাতার সেবা, দেহ ও মনের শুচিতা, মনকে সংযত করা, বিষয় বৈরাগ্য, ইষ্টসেবা, একনিষ্ঠ ভক্তি থাকা উচিত।
সত্বগুন মানবের দুঃখ দূর করিয়া সুখ দেয়। রজোগুন মানবকে কর্মে আসক্ত করে। তমোগুন মানবের জ্ঞানকে ঢাকিয়া ভ্রমে পতিত করায়।
ওঁ ব্রহ্মণায় নমঃ
সংগৃহীত