ওঁ শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা
কলকাতার ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি হল “দেবী কালীর” পবিত্র আবাসালয় যিনি সম্ভবত সম্পূ্র্ণ গ্রহের দৃঢ় নারী শক্তির সবচেয়ে সারগর্ভ ও পরাক্রমশালী প্রতিমূর্তি। এটি বলাই বাহুল্য যে, দেবী কালী হলেন এই “আনন্দ নগরীর” এক অখন্ড অধিষ্ঠাত্রী দেবী। যে কেউ সহজেই শহরের যে কোনও স্থানে দেবী কালীর উৎসর্গীকৃত মন্দির খুঁজে পেতে পারেন। তবে কোনওরকম দ্বিধা ছাড়াই কলকাতার ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির এই মন্দির সবচেয়ে অন্বেষিত স্থান যেখানে প্রার্থনা নিবেদনের জন্য দিনে অসংখ্য ভক্তের সমাগম হয়।
কলকাতার ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে, দেবীকে “সিদ্ধেশ্বরী”-রূপে পূজা করা হয় অর্থাৎ যিনি ইচ্ছা-পূরণ করেন। দেবীর মূর্তি মাটির তৈরি।
ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির ইতিহাস
১৭০৩ সালে গিরিশ ঘোষ এই বিরাটাকায় মন্দিরটি দেবী কালীর উৎসর্গে নির্মাণ করেছিলেন।
জঙ্গলের মধ্য থেকে শোনা যেত কালী মন্দিরের ঘন্টাধ্বনি। ঠনঠন-ঠনঠন। সেই থেকেই এলাকার নাম ঠনঠনিয়া। সেই ঠনঠনিয়াতেই সিদ্ধেশ্বরী কালীবাড়ি। যে মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী গান শুনেছেন কিশোর গদাধর চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। কামারপুকুর থেকে এসে মন্দিরের অদূরে ঝামাপুকুরে তখন থাকতেন গদাধর। দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে গদাধর থেকে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস হওয়ার পরেও বারবার দর্শন করতে এসেছেন ঠনঠনিয়া কালীকে। এই দেবী গান শুনেছেন সাধক কবি রামপ্রসাদ সেনের গলাতেও। তিনিও দর্শন করতে আসতেন সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতাকে।
কোথায় অবস্থিত এই মন্দির
- এই মন্দিরটি মহাত্মা গান্ধী সড়কের উপর কলেজ স্ট্রীটে অবস্থিত (বিধান সরণি, কলকাতা-৭০০০০৬)
- নিকটবর্তী মেট্রো ষ্টেশন ‘মহাত্মা গান্ধী রোড’ (M.G. Road)
- নিকটবর্তী বিমানবন্দর হল নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
- নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশন হল হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন।
- কোনও প্রবেশমূল্য নেই।
পরিদর্শনের শ্রেষ্ঠ সময়
- এটি সাধারণত সকাল ৯:০০ থেকে সন্ধ্যা ৮:৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে, তবে দর্শনের আদর্শ সময় হল সকাল ৯:০০-টা থেকে দুপুর ১২:০০-টা এবং বিকেল ৫:০০-টা থেকে সন্ধ্যা ৮:৩০-টা পর্যন্ত।
- এই মন্দিরটি পরিদর্শনের জন্য শ্রেষ্ঠ সময় হল শনিবার এবং মঙ্গলবার।
- অমাবস্যার রাতেও এই মায়াময় ঐশ্বরিক গন্তব্য দেখতে যেতে পারেন।
- দেবী কালীর মহিমা মুখরিত স্থান দেখার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল “দীপাবলী”র সময়।
পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের বাংলায় পরিচিত “ডাব” বা নারকেল আপনি দেবীকে নিবেদন করতে পারেন যা রাস্তার ধারে যে কোনও বিক্রেতার কাছ থেকে সহজেই উপলব্ধ হয়।
কলকাতার এই ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি দর্শনে একটি সত্যিকারের আত্ম-জ্ঞানগর্ভ অভিজ্ঞতা হতে পারে যা আপনি সারাজীবন মনে রাখতে পারেন।