ওঁ অজ্ঞান-তিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জন-শলাকয়া।চক্ষুরুন্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।।
সত্যং পূজা সত্যং সত্যং দেবো নিরঞ্জনঃ।গুরোর্বাক্যং সদা সত্যং সত্যমেব পরং পদম্।।২অখন্ড-মন্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্।তত্পদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।
পিতৃমাতৃ-সুহৃদ্বন্ধু-বিদ্যা-তীর্থানি দেবতা।ন তুল্যং গুরুণা শীঘ্রং স্পর্শয়েৎ পরমং পদম্।
গুরুর্ব্রহ্মা গুরুর্বিষ্ণুঃ গুরুর্দেবো মহেশ্বরঃ।গুরুরেব পরং ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ।
ধ্যানমূলং গুরোমূর্ত্তিঃ পূজামূলং গুরোঃ পদম্।মন্ত্রমূলং গুরোর্বাক্যং মোক্ষমূলং গুরোঃ কৃপা।
ব্রহ্মানন্দং পরম-সুখদং কেবলং জ্ঞানমূর্ত্তিম্।দ্বন্দ্বাতীতং গগন-সদৃশং তত্ত্বমস্যাদি-লক্ষ্যম্।।একং নিত্যং বিমলমচলং সর্ব্বদা সাক্ষিভূতম্।ভাবাতীতং ত্রিগুণ-রহিতং সদ্গুরুং তং নমামি।
ত্বমেব মাতা চ পিতা ত্বমেব।ত্বমেব বন্ধুশ্চ সখা ত্বমেব।ত্বমেব বিদ্যা দ্রবিণং ত্বমেব।ত্বমেব সর্ব্বং মম দেবদেব।
বাংলা মানে-
অজ্ঞান-অন্ধকারাচ্ছন্ন শিষ্যের চক্ষু জ্ঞানাঞ্জন-শলাকা দিয়া খুলিয়া দেন, সেই শ্রীগুরুদেবকে ভক্তিভরে প্রণাম করি।
মন্ত্র সত্য, পূজা সত্য, দেব নিরঞ্জনও সত্য; শ্রীগুরুদেবের বাক্যও সর্ব্বদা সত্য বলিয়া জানিবে এবং সেই পরমপদও সত্য।
যাঁহার দ্বারা অখন্ড-মন্ডলাকার এই চরাচর বিশ্ব পরিব্যাপ্ত রহিয়াছে, তাঁহার শ্রীপাদপদ্ম যিনি দর্শন করাইয়া দেন, সেই শ্রীগুরুদেবকে পুনঃ পুনঃ প্রণাম করি।
এই জগতে পিতামাতা, সুহৃৎ-বন্ধু, বিদ্যাবুদ্ধি, তীর্থসমূহ এবং দেবদেবী কেহই শ্রীগুরুদেবের সমতুল্য হইতে পারে না; যেহেতু শ্রীগুরুদেবই একমাত্র সেই পরম ব্রহ্মপদ শীঘ্র লাভ করাইয়া দিতে পারেন।
শ্রীগুরুদেবই ব্রহ্মা, গুরুই বিষ্ণু, গুরুই দেব মহেশ্বর, শ্রীগুরুই পরব্রহ্ম স্বরূপ; সেই শ্রীগুরুদেবকে পুনঃ পুনঃ ভক্তিভরে প্রণাম করি।
শ্রীগুরুমূর্ত্তিই সর্ব্বদা ধ্যান করা কর্ত্তব্য, শ্রীগুরুদেবের শ্রীপাদপদ্মই সর্ব্বদা পূজা করা উচিত, শ্রীগুরুদেবের বাক্যই মন্ত্র-স্বরূপ এবং শ্রীগুরুকৃপাই মুক্তি বা মোক্ষ লাভের একমাত্র উপায়।
যিনি ব্রহ্মানন্দ-স্বরূপ, পরম সুখদানকারী, নিলির্প্ত, জ্ঞান-মূর্ত্তি-স্বরূপ, যিনি সুখদুঃখাদি দ্বন্দ্বের অতীত, গগনসদৃশ উদার, ‘তত্ত্বমসি’ প্রভৃতি মহাবাক্যের লক্ষ্য-স্বরূপ, যিনি এক, নিত্য, বিমল, অচল, সর্ব্বদা সমস্ত কিছুর সাক্ষীস্বরূপ, ভাবাতীত ও ত্রিগুণাতীত, সেই পরব্রহ্মরূপী শ্রীশ্রীসদ্গুরুকে ঐকান্তিক ভক্তিভরে প্রণাম করি।
হে গুরুদেব, তুমিই আমার মাতা, তুমিই আমার পিতা, তুমিই বন্ধু, তুমিই সখা। তুমিই আমার বিদ্যাবুদ্ধি, তুমিই আমার ধনৈশ্বর্য্য সবই; শুধু তাহাই নয়, হে আমার প্রাণদেবতা, তুমিই আমার জীবনের যথাসর্বস্ব।