ভাদ্রমাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে গণেশ পুজো শুরু হয় এবং তা ১০ দিন পর্যন্ত চলে। ১০ দিন পর অনন্ত চতুর্দশী তিথিতে গণেশ বিসর্জন করা হয়। চতুর্দশীর বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে,
এ দিন বিষ্ণুর অনন্ত রূপের পুজো করা হয়। আবার এদিনই গণেশ বিসর্জন হয়। কিন্তু কেন অনন্ত চতুর্দশীর দিনটি এত গুরুত্বপূর্ণ, আবার কেনই বা এদিনই গণেশ বিসর্জন করা হয়, জেনে নেওয়া যাক।
অনন্ত চতুর্দশীর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মনে করা হয় এদিন ১৪ লোকের নির্মাণ করেন শ্রীহরি বিষ্ণু। এই ১৪টি লোক হল তল, অতল, বিতল, সুতল, সলাতল, রসাতল, পাতাল, ভূ, ভবঃ, স্বঃ, জন, তপ, সত্য, মহ। এই সমস্ত লোকের রক্ষা করার জন্য অনন্ত রূপ ধারণ করেন বিষ্ণু। এমন হওয়ায় অনন্ত রূপে দেখা দেন বিষ্ণু। শাস্ত্র মতে নিয়ম মেনে এই ব্রত পালন করলে ব্যক্তির সমস্ত কষ্টের নিবারণ হয়। এ দিন যে জাতক,জাতিকা উপবাস করেন, তাঁদের বিষ্ণু সহস্ত্রনাম মন্ত্র জপ করা উচিত। এর ফলে ব্যক্তির সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হয়। পৌরাণিক ধারণা অনুযায়ী মহাভারত কালে এই ব্রত শুরু হয়।গণেশ চতুর্থীর দিন থেকে যে ১০ দিন ব্যাপী গণেশ উৎসবের সূচনা হয়, তার সমাপ্তি ঘটে অনন্ত চতুর্দশীর দিনে। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী ভাদ্র শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে গণেশকে মহাভারতের কাহিনি শোনানো শুরু করেন বেদব্যাস। গণেশ এ দিন থেকেই মহাভারত লিপিবদ্ধ করতে শুরু করেন। মহাভারত শোনানোর সময় বেদব্যাস চোখ বন্ধ কের নেন এবং লাগাতার ১০ দিন তাঁকে কাহিনি শোনাতে থাকেন ও গণেশ সেই কাহিনি লিখতে থাকেন। বেদব্যাস যখন চোখ খোলেন, তখন তিনি দেখেন যে, এক স্থানে বসে লিখতে লিখতে গণেশের শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি বেড়ে গিয়েছে। গণেশকে ঠান্ডা করার জন্য শীতল জলে ডুব দিতে বলেন। যে স্থানে বসে গণেশ মহাভারত লিপিবদ্ধ করছিলেন, তার পাশেই অলকানন্দা ও সরস্বতী নদীর সঙ্গম ছিল। যে দিন অলকানন্দা ও সরস্বতী নদীর সঙ্গমে গণেশ ডুব দিয়ে স্নান করেন, সেই দিনটি ছিল অনন্ত চতুর্দশী। এ কারণে চতুর্থীর দিন থেকে গণেশের পুজো শুরু হলেও অনন্ত চতুর্দশীর দিনই তাঁর বিসর্জন করা হয়।
আমদের লেখা কেমন লাগলো অবশ্যই comment box এ জানাবেন। ধন্যবাদ