নরক চতুর্দশীতে অকাল মৃত্যু থেকে মুক্তি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পূজা করা হয়। একটি পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, ভগবান শ্রী কৃষ্ণ কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে নরকাসুরকে বধ করেন ।নরক চতুর্দশী দীপাবলির এক দিন আগে।এটি ছোট দিওয়ালি, রূপ চৌদাস, নরকা চৌদাস, রূপ চতুর্দশী বা নরকা পূজা নামেও পরিচিত। এই দিনে মৃত্যুর দেবতা যমরাজ ও শ্রীকৃষ্ণের পূজা করার বিধান রয়েছে। রূপ চৌদ্দের দিন সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে চারপাশ আলোকিত করা হয়। নরকাসুর পুরাণ অনুসারে, পৃথিবীর গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণকারীঅসুর ছিলেন।নরকাসুর মথুরার রাজা কংসের অসুর বন্ধু ছিলেন।নরকাসুর ঠিকঠাক রাজত্ব করলেও বানাসুরের সাহচর্যে পড়ে সে দুষ্ট হয়ে পড়ে। এবার বশিষ্ঠ অভিশাপ দিলেন বিষ্ণুর হাতে নিহত হবে। কিন্তু নরকাসুর ব্রহ্মাকে তপোবলে সন্তুষ্ট করে এই বর পেয়েছিলেন যে, দেবতা, রাক্ষস, অসুর প্রভৃতি কেউ তাঁকে হত্যা করতে পারবে না এবং তাঁর রাজ্য চিরকাল থাকবে। নরকাসুর দেবরাজ ইন্দ্রকে জয় করে অত্যাচার শুরু করেন।রাক্ষসরাজ নরকাসুর শাসক হয়ে বসেন । নরকাসুর, দেবতা ও ঋষিমুনিদের কন্যাদেরও তার অন্তঃপুরে বন্দী করে রাখেন । স্ত্রীর হাতে মৃত্যু হবে এমন অভিশাপ পেয়েছিল নরকাসুর। এ কারণে কৃষ্ণ নিজের স্ত্রী সত্যভামাকে সারথী করেন এবং তাঁর সাহায্যে নরকাসুরের বধ করেন। কুমারী কন্যাদের বন্দীদশা থেকে মুক্ত করেন।এইভাবেই, অশুভের ওপর শুভ- এর জয়কে উদযাপন করতেই, নরক চতুর্দশী পালিত হয়ে থাকে । বধ হয়েছিল সেই দিনটি ছিল কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথি।
ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব পালিত হয় । খুবই স্পষ্টভাবে দেখা যায়, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলভেদে নরক চতুর্দশীর ধার্মিক রীতি ও কিংবদন্তীও আলাদা আলাদা । দক্ষিণ ভারতের মানুষরা সিঁদুর ও তেল দিয়ে একধরণের লেপ বানানোর জন্য অনেক ভোরবেলাতেই ঘুম থেকে উঠে পরেন । এটিকে তারা “উবটন” বলেন এবং নিজেদের কপালে এটি লাগিয়ে তারা স্নান করে নেন ।এদিন বহু বাড়িতে অলক্ষ্মীর পুজো বা যমের পুজো করে তাঁদের তুষ্ট রাখা হয়।
অন্য বিশ্বাস অনুসারে, নরক চতুর্দশীতে সকালে স্নান করে যমরাজের পূজো এবং সন্ধ্যায় প্রদীপ দান করলে নরকের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং অকাল মৃত্যুর ভয় থাকে না।
ধন্যবাদ