গুপ্তিপাড়ার রথ (টিনের আচ্ছাদনে সুরক্ষিত)
বাংলার রথযাত্রার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত রথযাত্রা হল এই গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রা। সারা ভারতে রথযাত্রা উপলক্ষে রথের পরিক্রমণ পথের দৈর্ঘ্য বিচার করলে প্রথম স্থানে পুরীর রথ হলে দ্বিতীয় স্থানে থাকবে গুপ্তিপাড়ার রথ। লোকমতে আনুমানিক ১৭৪০ খ্রিষ্টাব্দে গুপ্তিপাড়ায় প্রথম রথযাত্রা উৎসব শুরু করেন মধুসুদানন্দ। রথযাত্রার দিন বৃন্দাবনচন্দ্র মন্দিরের জগন্নাথ-বলরাম-শুভদ্রা রথে চেপে যায় মাসির বাড়ি। রথের দড়ি টানার ক্ষেত্রেও রয়েছে এক বিশেষত্ব; চারটি দড়ির মধ্যে একটি দড়ি সংরক্ষিত থাকে শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য আর বাকি দড়িগুলি থাকে জনসাধারণের জন্য আর ব্রেকের জন্য থাকে পিছনের দিকে একটি দড়ি। রথযাত্রা উপলক্ষে যে মেলার আয়োজন হয় তাও দেখার মত। বাজার থেকে শুরু করে মঠ পর্যন্ত থাকে বিশাল মেলা আর এই মেলা চলতে থাকে পুরো এক মাস। জানা যায় মেলা থেকে প্রাপ্ত অর্থও চলে যায় মঠের তহবিলে, যা মঠের অন্যতম চালনাশক্তি। তবে রথযাত্রা উপলক্ষে গুপ্তিপাড়ার অন্যতম আকর্ষণ থাকে উল্টোরথের আগের দিন। দেবতাদের ভোগ নিবেদনের পর খুলে দেওয়া হয় মাসির বাড়ির মন্দিরের দরজা। আর সেই ভোগ পাওয়ার আসায় শয়ে শয়ে গোপরা (গয়লা সম্প্রদায়) ঝাঁপিয়ে পড়ে; দেবতার উদ্দেশ্য অর্পণ করা বিভিন্ন ভোগের কলসি / মালসা লট করে নেন। এক কথায় চলতে থাকে শক্তি পরীক্ষা, আর এই অনুষ্ঠানটি প্রচলিত ‘ভান্ডার লুঠ’ নামে। রথযাত্রার দিনগুলি ছাড়া গুপ্তিপাড়ার রথ সারা বছর সম্পূর্ণরূপে টিনের আচ্ছাদনে দাঁড়িয়ে থাকে মঠের পাশেই খোলা জায়গায়।এই রথ টি নবরত্ন মন্দিরের আদলে তৈরি।উচ্চতা 36 ফুট। 16 টি চাকা ও 9 টি চূড়া নিয়ে তৈরি।