ভারতবর্ষে সর্প পূজা একটি প্রাচীন অনুষ্ঠান। মনসা সাপের দেবী। তিনি মূলত লৌকিক দেবী। পরবর্তীকালে পৌরাণিক দেবী রূপে স্বীকৃত হন। শ্রাবণ মাসের শেষ দিনে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রতিটি ঘরে ঘরে মনসা দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
চৈতন্যদেবের সময় বাংলাদেশে মাটির প্রতিমা গড়ে ঘটা করে মনসা পূজা হতো। মনসা পূজা দুভাবে হয়ে থাকে- কোনও কোনও পূজায় পাঠা বলি দিয়ে হয়। আবার পাঁঠাবলি ছাড়াও পূজা হয়। আইনি জটিলতার কারণে এখন আর বলি প্রথার চল বিশেষ নেই।
মনসা পূজার প্রতিমাতেও পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। কেউ কেউ মনসা প্রতিমা বানিয়ে পূজা করে থাকে। আবার কেউ কেউ পঞ্চ সর্পের ফণা যুক্ত প্রতিমার পূজা করে। গোত্র ও অঞ্চল ভেদে প্রথার ওপর ভিত্তি করে মনসা দেবী বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রূপে তার ভক্তদের দ্বারা পূজিত হয়ে থাকেন।
‘মনস্’ শব্দের উত্তর স্ত্রীলিঙ্গের আপ প্রত্যয় করে ‘মনসা’ শব্দের উৎপত্তি। ব্যুৎপত্তিগত অর্থে মনসা মনের অধিষ্ঠাত্রী দেবতা। দেবী ভাগবত ও ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে সর্পভয় থেকে মনুষ্যগণকে পরিত্রাণের জন্য ব্রহ্মা কশ্যপ মুনিকে মন্ত্র বা বিদ্যা বিশেষ আবিষ্কারের জন্য আদেশ করেন। ব্রহ্মার আদেশে কশ্যপ যখন মনে মনে এ বিষয়ে চিন্তা করছিলেন তখন তাঁর মনন ক্রিয়ার সাকার রূপ পরিগ্রহ করে এক মহাদেবী দীপ্যমান হন। তিনটি কারণে এই মহাদেবীর নাম হয় মনসা। প্রথমত তিনি কশ্যপ মুনির মানস কন্যা, দ্বিতীয়ত মনুষ্যগণের মনই তাঁর ক্রীড়া ক্ষেত্র, তৃতীয়ত তিনি নিজেও মনে মনে বা যোগবলে পরমাত্মার ধ্যান করেন। মনসার দ্বাদশটি নাম আছে। জরৎকারু, জগদ্গৌরি, মনসা, সিদ্ধ যোগিনী, বৈষ্ণবী,নাগ ভগিনী, শৈবী, নাগেশ্বরী, জরৎকারু-প্রিয়া, আস্তিক-মাতা, বিষহরী, মহাজ্ঞানযুতামনসা শব্দটির বিশ্লেষণ করলে অর্থ দাঁড়ায় মনে চিন্তন। কিন্তু দেবী রূপে মনসা কি চিন্তনের কোন বিষয়? মনের মধ্যে বিষ থাকতে পারে, সেই বিষ অবশ্যই মনকে বিষাক্ত করে এবং চিন্তার খোরাক যোগায়, মনন কে সুখশ্রাবী করার জন্য মন্ত্রের উদ্ভব। মন্ত্রই মনকে ঊর্ধ্বগামী করে। সেই মন যদি বিষক্রিয়ায় জর্জরিত হয় তবে তো সমগ্র দেহই বিষাক্ত হয়ে যাবে। তাই মনসার উৎপত্তি যেমন আর্যঋষি গণ দেখিয়েছেন বিষহরী দেবীরুপে সেরূপ বিষহরণ করে মনকে বিষযুক্ত করারও ব্যবস্থা তার হাতে। সাপের দাঁতে বিষ আছে কিন্তু নিজে যখন খায় তাতে বিষ লাগে না। কিন্তু হিংসায় বা আত্মরক্ষায় যখন দংশন করে তখন দংশিত স্থানে বিষ ছড়ায়। তাই মনে বিষ হলো হিংসা ক্রোধ, লোভ এগুলো দূর করার দেবী মনসা। চিন্তা থেকে আমাদের মুক্তি নেই তবু চিন্তা যাতে যুক্ত হতে পারে, চিন্তা যাতে রিপুর বশ না হয় তার চেষ্টাই আমাদের করতে হবে-এই শিক্ষাই দিয়েছেন দেবী মনসাব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ, দেবী ভাগবত পুরানে মনসা দেবীর লীলা ও ঘটনার কথা লেখা রয়েছে । মহাভারতেও কিছুটা অংশে রয়েছে মনসা দেবীর প্রসঙ্গ ৷ মঙ্গল কাব্য মতে দেবী মনসা হলেন শিবের মানস কন্যা । তিনি আবার নাগরাজ বাসুকীর ভগিনী । পদ্ম পাতায় দেবীর জন্ম বলে তাঁর আর এক নাম পদ্মাবতী । দেবী ভাগবত পুরানে আবার মনসাকে কশ্যপ মুনির কন্যা বলা হয়েছে । মহাভারত বলে মনসা দেবী বিবাহিতা । তাঁর পতির নাম জগৎকারু । তাঁদের একটি পুত্র সন্তান হয়, তাঁর নাম আস্তিক । শিব মনসাকে কৈলাসে নিয়ে এলে দেবী পার্বতী রাগে তাঁর এক চোখ নষ্ট করে দেন ৷ সেই থেকে মনসা দেবী কানা ৷ এই মনসা দেবী আবার সর্পরাজ্যের রানি ৷ সাপদের দেবী তিনি ৷মনসা কথার উৎপত্তি ‘মানস’ শব্দ থেকে ৷ অর্থাৎ তিনি মনের অধিষ্ঠাত্রী দেবী ৷ আগামী কাল সেই মনসা দেবীর পুজো ৷ নাগকূলকে তুষ্ট রাখতেই প্রাচীনকালে মনসার পুজো করতেন গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষরা ৷
ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ, দেবী ভাগবত পুরানে মনসা দেবীর লীলা ও ঘটনার কথা লেখা রয়েছে । মহাভারতেও কিছুটা অংশে রয়েছে মনসা দেবীর প্রসঙ্গ ৷ মঙ্গল কাব্য মতে দেবী মনসা হলেন শিবের মানস কন্যা । তিনি আবার নাগরাজ বাসুকীর ভগিনী । পদ্ম পাতায় দেবীর জন্ম বলে তাঁর আর এক নাম পদ্মাবতী । দেবী ভাগবত পুরানে আবার মনসাকে কশ্যপ মুনির কন্যা বলা হয়েছে । মহাভারত বলে মনসা দেবী বিবাহিতা । তাঁর পতির নাম জগৎকারু । তাঁদের একটি পুত্র সন্তান হয়, তাঁর নাম আস্তিক । শিব মনসাকে কৈলাসে নিয়ে এলে দেবী পার্বতী রাগে তাঁর এক চোখ নষ্ট করে দেন ৷ সেই থেকে মনসা দেবী কানা ৷ এই মনসা দেবী আবার সর্পরাজ্যের রানি ৷ সাপদের দেবী তিনি ৷
শ্রাবণ মাসে মহাদেবের জটায় ফণা তুলছে স্বয়ং নাগরাজ, চাক্ষুস করতে উপচে পড়ল ভিড়
মনসা কথার উৎপত্তি ‘মানস’ শব্দ থেকে ৷ অর্থাৎ তিনি মনের অধিষ্ঠাত্রী দেবী ৷ আগামী কাল সেই মনসা দেবীর পুজো ৷ নাগকূলকে তুষ্ট রাখতেই প্রাচীনকালে মনসার পুজো করতেন গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষরা ৷
মনসা পুজোর পদ্ধতি
অধিকাংশ ক্ষেত্রে, প্রতিমায় মনসা পূজা করা হয় না। মনসা পূজিতা হন স্নুহী বা সীজ বৃক্ষের ডালে অথবা বিশেষভাবে সর্পচিত্রিত ঘট বা ঝাঁপিতে। যদিও কোথাও কোথাও মনসা মূর্তিরও পূজা হয়। বিশেষ করে বাংলার গ্রামে গ্রামে মনসা পূজা বহুল প্রচলিত। এই অঞ্চলে মনসার মন্দিরও দেখা যায়। বর্ষাকালে সাপেদের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে বলে এই সময়ই মনসা পূজা প্রচলিত। শ্রাবণ মাসে নাগপঞ্চমীতেও মনসার পূজা করা হয়। বাঙালি মেয়েরা এই দিন উপবাস ব্রত করে সাপের গর্তে দুধ ঢালেন।