নবদ্বীপ ধামে রাসে পূজিতা চার বোন। বড় শ্যামা মাতা, মেজো শ্যামা মাতা, সেজো শ্যামা মাতা ও ছোট শ্যামা মাতা।নবদ্বীপের রাস উৎসব বহুদিন ধরেই বিখ্যাত সারা বাংলায়। কিন্তু এর সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে কিছু বিশেষত্ব। নামে রাস উৎসব হলেও এক তিথিতে পূজিত হন নানা দেবদেবী। শাক্ত মূর্তির সঙ্গে পুজো পান বৈষ্ণবধারার প্রতিমা। সনাতন ধর্মের সার্বিক সমন্বয় ঘটে নবদ্বীপের রাস উৎসবে।১৭৫২-৫৬ সালের মাঝামাঝি শঙ্করনাথ তর্কবাগীশ শক্তিমূর্তি গড়ে রাস পূর্ণিমার পুজো শুরু করেন। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের তরফে আসে অর্থসাহায্য। শঙ্করনাথের ওই পুজোর পরের বছরই ব্যাদড়াপাড়ার ব্রাহ্মণরা শবশিবা মায়ের পুজো শুরু করলেন। কালীমূর্তির নীচে পর পর দু’টি শিব। এক দম নীচে শবরূপী শিব। তাঁর উপরে সপ্রাণ শিব। একই মূর্তির পুজো হয় আমপুলিয়া পাড়াতেও। নবদ্বীপে রাসের দ্বিতীয় প্রাচীন প্রতিমা হল শবশিবা মাতার। পুজো উদ্যোক্তাদের কথায়, শবশিবা মাতা কৃষ্ণচন্দ্রের গুরুদেব চন্দ্রশেখর ভট্টাচার্যের ইষ্টদেবী। এখন যেখানে পুজো হয় সেটি ছিল তাঁর ভিটে। কমবেশি দেড়শো বছর আগে তাঁরা এখান থেকে চলে যান। পুজোর ভার নেন অঞ্চলের বর্ধিষ্ণু ব্রাহ্মণেরা। যাদের মধ্যে অন্যতম পূর্ণচন্দ্র ভট্টাচার্য, তার কন্যা ভগবতীদেবী, নসুজীবন ভট্টাচার্য প্রমুখ। চাঁদা তুলে এই পুজো হয়। এবারের বাজেট প্রায় দু’লক্ষ টাকা।রাসে নবদ্বীপে গঙ্গা মূর্তি পুজো বহু বছর ধরে হচ্ছে। পুরাণ কাহিনি মতে, ভগীরথের মর্ত্যে গঙ্গা আনয়নের দৃশ্যই ফুটে ওঠে প্রতিমার গড়নে। এলাকার অন্যতম বড় প্রতিমা হল বেগুনিয়া পাড়ার গঙ্গা মাতা। ১৯৭২ সাল। কয়েক জন যুবক গোপাল সেন, সাহেব পাল, গৌড় পাল, কালী পালদের মনে ইচ্ছে জাগে – রাসে পাড়ায় একটা পুজো হোক। অনেক খুঁজে শেষে এক পালবাড়িতে গিয়ে দেখা যায় একটি মাত্র গঙ্গা প্রতিমা অবিক্রিত পড়ে আছে। দরদাম করে তিন টাকায় সেই প্রতিমা কিনে শুরু হয় বেগুনিয়া পাড়ার রাস। সেই পুজো এবার ৫২ বছরে পদার্পণ করেছে। পুজোর বাজেট এ বার তিন লক্ষ টাকা।
সংগৃহীত
ধন্যবাদ