বর্ধমানেশ্বর শিব মন্দিরটি বর্ধমান অবস্থিত এবং এর প্রাঙ্গণে ভগবান শিবের একটি বিশাল মূর্তি রয়েছে। বিশ্বাস করা হয় যে এই মূর্তিটি দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত এবং সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এর উচ্চতা অতুলনীয়। ‘মোটা শিব’ বা ‘মোটা বাবা’ নামে পরিচিত,
দেড় হাজার বছরের বেশি প্রাচীন । ইতিহাসবিদরা বলেন সম্রাট কণিষ্কও নাকি এই শিবলিঙ্গের পুজো করতেন । তবে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক রয়ে গিয়েছে । এই শিবলিঙ্গটি বর্ধমানেশ্বর নামেই পরিচিত । স্থানীয়রা একে মোটাবাবাও বলে থাকেন।
বাবার শিলামূর্তি কিভাবে পাওয়া যায় –
1972 সালে বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জ এলাকায় একটা নির্মাণের জন্য খননকাজ শুরু হয় । শ্রমিকেরা গাঁইতি শাবল দিয়ে মাটি কাটতে গিয়ে পাথরের উপরে আঘাত লাগার শব্দ শুনতে পান । ফলে তারা চমকে ওঠেন । এরপর ধীরে ধীরে মাটি খোঁড়া হয় । দেখা যায় মাটির নীচে বিশাল শিবলিঙ্গ । উচ্চতা প্রায় ছ’ফুটের কাছাকাছি, ব্যাসও প্রায় ছয় ফুট ।গৌরীপট্টের পরিধি প্রায় 18 ফুট । ফলে ক্রেনের সাহায্য নিয়ে শিবলিঙ্গকে মাটির নীচ থেকে তুলে পাশে স্থাপন করা হয় । মন্দিরের ঠিক পিছনেই আছে একটা পাড় বাঁধানো পুকুর । যা দুধপুকুর নামেই পরিচিত । মূলত শ্রাবণ মাসে বর্ধমানেশ্বরের জন্মতিথিতে ও সারাবছর বাবার মাথায় জল ঢালার জন্য ওই পুকুর থেকে জল তোলা হয় । এছাড়া শ্রাবণ মাসে বাবার মাথায় জল ঢালার জন্য প্রায় 60 কিলোমিটার দূরে কাটোয়ার গঙ্গা থেকে জল আনতে যান অগণিত মানুষ । হাঁটা পথে ফিরে তাঁরা শিবের মাথায় জল ঢালেন । এই শিবলিঙ্গ দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষজনের ভিড় উপচে পড়ে । শিবরাত্রি উপলক্ষে এখানে পাঁচদিন ধরে মেলা বসে । চলে যাত্রাপালা ও কীর্তন-সহ নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।
অনেক এ বলেন সম্রাট কণিষ্কও নাকি এই শিবলিঙ্গের পুজো করতেন । পরে প্রচণ্ড বন্যায় শিবলিঙ্গটি ভেসে যায় । তবে এত বৃহৎ শিবলিঙ্গ কীভাবে জলে ভাসবে তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে । তবে এত বৃহৎ শিবলিঙ্গ রাঢ়বঙ্গে আর কোথাও নেই । এর থেকে বেশি উচ্চতার লিঙ্গ থাকলেও তার গৌরীপট্ট নেই ।মন্দিরের পূজারি অমল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, শিবরাত্রির দিনে এখানে চার প্রহরে পুজো করা হয় । পুজো উপলক্ষে এখানে মেলা বসে ।
মোটা বাবার দর্শনে সকল ভক্তের মনের বাসনা পূর্ণ হয়। বাবা সকলের মঙ্গল করেন।
সংগহীত

