উল্টোরথের দিন মাসির বাড়ি থেকে রথে চেপে বাড়ি ফিরলেও.. তিন ভাই বোন শ্রীমন্দিরের সামনে দুই দিন রথেই অবস্থান করেন..তৃতীয় দিন মন্দিরে প্রবেশ করতে গেলে ঘটে এক মজার কান্ড..বলরাম আর সুভদ্রা ভালোই ভালোই বাড়ি ঢুকলেও যেই জগন্নাথ ঢুকতে যাবেন..লক্ষ্মী দেবী সটান মুখের উপর দুম করে দরজা বন্ধ করে দেন..কারণ তিন ভাইবোন মাসির বাড়ি থেকে দেদার আমোদ আহ্লাদ করে এসেছেন অথচ তাঁকে নিয়ে যান নি..অভিমানিনী লক্ষ্মী দেবী এই কয়দিন একা একা শ্রীমন্দিরে ছিলেন..অবশ্য মাঝখানে একদিন তিনি মাসির বাড়ি দেখা করতে গিয়েছিলেন কিন্তু জগন্নাথ তাঁকে পাত্তা দেন নি..অবস্থা বেগতিক দেখে বুদ্ধি করে এক হাঁড়ি রসগোল্লা জগন্নাথ তাঁকে উপহার দেন..যদি কিছু কাজ হয়..ত্রিভুবনের অতুল ঐশ্বর্যের অধিকারিনী লক্ষ্মীর মান ভাঙে ওই রসগোল্লা খেয়ে..এবার খুশী মনে পতিদেবটিকে নিয়ে তিনি শ্রীমন্দিরে প্রবেশ করেন..এক বছরের মতো নিশ্চিন্ত আর পতিদেব কাছ ছাড়া হবেন না..মন্দিরের সিংহ দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়..আর বাইরে ভক্ত কুলের মন বিষাদময় হয়ে ওঠে…
এবার কথা হলো, এই যে মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া ,এত্তগুলো মানুষের সামনে বেইজ্জত হওয়া কি ভগবানের ভালো লাগে..কিন্তু
“প্রিয়া যদি মান করি করয়ে ভৎর্সন।
বেদস্তুতি হৈতে হরে সেই মোর মন।।”
মানে প্রিয়তমা যদি অভিমান করে চারটে গালি-গালাজও করে তা বেদস্তুতির থেকেও ভগবানের অধিক মন হরণ করে..
প্রতিবছর দাম্পত্যের এই মধুর রসের সাক্ষী থাকে আপাময় জনসাধারণ আর তা অনুষ্ঠিত হয় লক্ষ্মী দেবী ও জগন্নাথ দেবের সেবাইতদের মাধ্যমে…বাঙালির এই প্রাণের মিষ্টি রসগোল্লাতেই প্রতিবছর রথযাত্রার মধুরেণ সমাপয়েৎ হয়ে থাকে…
‘মধুর, তোমার শেষ যে না পাই প্রহর হল শেষ –
ভুবন জুড়ে রইল লেগে আনন্দ-আবেশ..’
এই দিন কে নীলাদ্রি বিজয় বলা হয়।লক্ষ্মীর মান ভাঙিয়ে জগন্নাথ ঘরে ফিরবেন।